একাডেমিক পরীক্ষা আমাদের মেধাকে মূল্যায়নের কতবড় অন্তরায় এটা কি আমাদের অভিভাবকরা কি কোনদিনই বুঝতে পারবে না? এমনকি আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা কি ঐ গতবাঁধা আস্তাকুঁড়ের নিয়ম মেনেই চলবে? যেখানে উন্নতদেশগুলো মননশীলতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে নতুন আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করছে আর আমরা পেছনদিকেই ছুটে চলছি। পাখিদের মত গিলছি পড়া আবার বমি করে দিচ্ছি পরীক্ষার পাতায়। আর, এই ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র দিয়ে পাওয়া রেজাল্ট "V" চিহ্ন সহকারে দেখিয়ে অভিভাবকদেরও লোভী করে তুলছি। শেষে কোথাও কিছু করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য উপরোক্ত সবাই দায়ী।
যাইহোক, সিংগাপুরের এক স্কুলের প্রিন্সিপালের, অভিভাবকদের উদ্দ্যেশে লিখা চিঠি আমাদের পথ দেখাবে বলে আশা করি। তিনি এখানে অভিভাবক তথা শিক্ষাব্যবস্থার ভ্রম আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে নানা নির্দেশনা দিয়েছেন যা আমাদের শিক্ষা সম্প্রর্কিত তথাকথিত চিন্তাধারা বদলিয়ে দিবে বলে আশা করি। মূল চিঠিটি ইংরেজীতে লিখা।আমি ইন্টারনেট থেকে নিয়ে বাংলা অনুবাদ করলাম। আশা করি এটা সবার কাজে দিবে।
মূল চিঠিঃ
Dear Parents.
The exams of your children are to start soon. I know you are all really anxious for your child to do well.
But, please do remember, amongst the students, who will be sitting for the
exams, there is an artist, who doesn't need to understand Maths.
There is an entrepreneur, who doesn't care about History or English literature.
There's a musician, whose Chemistry marks won't matter.
There's a sportsperson, whose physical fitness is more important than
Physics..like Schooling
IF your child does get top marks, that's great! But, iF he or she doesn't. please don’t take away their seIf-confidence and dignity From them.
Tell them it's OK, it's just an exam! They are cut out for much bigger things in life.
Tell them, no matter what they score, you love them and will not judge them.
Please do this, and when you do, watch your children conquer the world. One exam or a low mark won't take away their dreams and talent.
And please, do not think that doctors and engineers are the only happy people in the world.
With Warm Regards,
The Principal.
বাংলা অনুবাদঃ
প্রিয় অভিভাবকবৃন্দ,
শিঘ্রই আপনাদের ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। আমি জানি আপনারা আপনাদের সন্তানদের ভালো ফল করা নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন আছেন।
কিন্তু আপনারা , দয়া করে মনে রাখবেন যে -এইসব পরীক্ষায় অংশগ্রহনেচ্ছু ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে কিছু চিত্রশিল্পী থাকবে যাদের অংক জানার কোন দরকারই নাই।
এদের মধ্যে কিছু উদ্দোক্তা থাকবে যারা ইতিহাস বা ইংরেজী সাহিত্যের থোরাই পরোয়া করে।
কিছু সংগীতশিল্পী থাকবে যাদের রসায়নের নাম্বার কোন প্রভাব ফেলবে না।
কিছু ক্রীড়াব্যক্তিত্ব থাকবে যাদের শারীরিক সুস্থতা পদার্থ তথা পড়াশুনার থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সেটা অসাধারণ হবে, যদি আপনার সন্তান সর্বোচ্চ মার্কস পায়! কিন্তু, না পেলে , দয়া করে তাদের আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা কেড়ে নিবেন না।
তাদের বলবেন এটা তো শুধুমাত্র একটা পরীক্ষা! কোন ব্যাপার না। এগুলো পরে জীবনের বড় বড় অর্জন থেকে এমনিই বাদ হয়ে যাবে।
তাদের বলুন যে, আপনি তাদের ভালোবাসবেন ও কখনই এজন্য শাস্তি দিবেন না, যে ফলই তারা করুক।
দয়া করে এভাবে তাদের গাইড দেন আর এভাবে যখন গাইড দিবেন ,আপনার সন্তানদের পৃথিবী জয় করা আপনি অবশ্যই দেখতে পাবেন। একটা পরীক্ষা বা খারাপ ফলাফল তাদের স্বপ্ন বা মেধাকে নষ্ট করবেনা।
আর, দয়া করে মনে মনে এই চিন্তা-ভাবনা করবেননা , যে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়াররাই পৃথিবীতে শুধুমাত্র সুখী ।
উষ্ম শুভেচ্ছার্থে,
অধ্যক্ষ ।
এই চিঠি শুধু একটি সাধারণ চিঠি নয়। অভিভাবক ও শিক্ষাব্যবস্থার তথাকথিত চিন্তাধারা পরিবর্তনের
মাধ্যমে মননশীল জাতি গঠনের একটি হাতিয়ার। সবার মাঝে এই বানী পৌঁছে যাবে বলে আশা করি। আমি খুব আশাবাদী মানুষ। আশা করি, সেদিন আর দূরে নয় হয়ত, যেদিন এ জেনারেশনে না হলেও আমরা আমাদের সন্তানদের সো-কলড শিক্ষিত নয়, সুশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে পারব।